মাগুরা প্রতিনিধিঃ
মাগুরা সদর উপজেলার কৃষি অফিসার তোজাম্মেল হোসেনের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি গাড়ির বেপরোয়া ব্যবহার থেকে শুরু করে নিষিদ্ধ ইউক্যালিপটাস চারা বিক্রি, কৃষি প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ এবং কৃষকদের প্রাপ্য সুবিধা বঞ্চনার অভিযোগে কৃষকসহ স্থানীয় মহলে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অভিযোগ রয়েছে, যোগদানের পরপরই তোজাম্মেল হোসেন সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার শুরু করেন। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
২০২৫ সালের ২৯ মে সরকার ইউক্যালিপটাস চারা বিক্রি ও রোপণ নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে এবং সরকারিভাবে তা ধ্বংস করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, অর্থের বিনিময়ে ওই কৃষি কর্মকর্তা বিভিন্ন নার্সারির মাধ্যমে নিষিদ্ধ চারা বিক্রির সুযোগ করে দিয়েছেন।
আলাইপুর, সত্যপুর, অঙ্গারদহ ও বরই ব্লকের কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, প্রদর্শনী প্রকল্পে তারা শুধু সাইনবোর্ড, সামান্য কিছু চারা ও সার পেয়েছেন। প্রকল্প অনুযায়ী পর্যাপ্ত চারা, সার, পরিচর্যা খরচ ও জৈব নাশক দেওয়ার কথা থাকলেও কৃষকরা তা পাননি। কলা চাষিরা প্রতিশ্রুত ব্যাগিং সিস্টেমের ব্যাগও পাননি।
আলাইপুর ব্লকের কৃষক ভক্ত জানান, কৃষি অফিসারের কাছে সেবা চাইতে গেলে তিনি খারাপ ব্যবহার করেন এবং কৃষকদের ডেকে দুপুরের খাবার খাওয়াতে বলেন।
নাসির এগ্রো ফার্মের মালিক নাসির জানান, কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি কোনো সাহায্য পাননি, বরং ওই কর্মকর্তার ব্যবহার ভালো নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জানান, পারিবারিক পুষ্টি বাগানের ৩৪০টি প্রদর্শনী দেওয়ার কথা থাকলেও একটি প্রদর্শনীও বাস্তবায়ন হয়নি। বরং বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, জেলার ১৪ জন বিসিআইসি সার ডিলারের কাছ থেকে মাসোহারা আদায় করেন তোজাম্মেল হোসেন। এর ফলে ডিলাররা উচ্চ দামে সার বিক্রি ও কালোবাজারিতে জড়িত হয়েছেন। কৃষকদের অভিযোগ, চড়া দামে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
এ বিষয়ে মাগুরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক তাইজুল ইসলাম বলেন,
“অভিযোগগুলো প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও অভিযুক্ত কৃষি কর্মকর্তা সাক্ষাৎ দেননি এবং ফোনও রিসিভ করেননি। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি দাবি করেন,
“আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। এসব বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।”