"আমার বিয়ের অনুষ্ঠানে আসছিলেন আমার অন্তঃসত্ত্বা বোন রেশমা বেগম। পথেই সব কিছু কেড়ে নিল ঘাতক বাস। বোন রেশমা মারা গেল, সঙ্গে আমার ভাগ্নে আব্দুল্লাহও মারা গেল। তাদের নিথর দেহ এলো বাড়িতে।" মুহুর্তের মধ্যেই বিয়ের উৎসবের আবহ থাকা বাড়ীতে নেমে এসেছে বিষাদের ছায়া।
শনিবার নিহত রেশমার ছোট বোন শোকে কাতর পুতুল আক্তার প্রিয় বোন ও ভাগ্নেকে হারিয়ে বিলাপ করতে করতে এভাবেই বিয়ে বাড়ীর শোকাবহ পরিস্থিতি কথা জানালেন।
মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পুয়ালী গ্রামে মালেক ঘরামির বাড়িতে আয়োজন চলছিল। ছোট মেয়ে পুতুল আক্তারের সঙ্গে পাশের মাইজপাড়া গ্রামের জসিম উদ্দিনের বিয়ের আয়োজন চলছিল। বিয়েতে অংশ নিতে শুক্রবার মোটরসাইকেলযোগে ঢাকার মগবাজারের বাসা থেকে বের হয়ে স্বামী-সন্তানসহ মাদারীপুরে বাবার বাড়িতে যাচ্ছিলেন রেশমা বেগম।
অপরদিকে মেয়ে-নাতিদের আসার অপেক্ষায় বাবা মালেক ঘরামিসহ পরিবারের সদস্যরা। এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোলপ্লাজায় মোটরসাইকেল থামিয়ে টোল দিচ্ছিলেন স্বামী সুমন মিয়া। ঠিক তখনই যেন আকাশ ভেঙে পড়ে মাথায়। পেছন থেকে একটি বাস দ্রুতগতিতে এসে চাপা দেয় তাদের।
শুক্রবার ধলেশ্বরী টোলপ্লাজায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় শিশু আব্দুল্লাহ। পরে মারা যায় রেশমা আক্তার ও অনাগত সন্তানও।
নির্মম মৃত্যুর খবর মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পুয়ালী গ্রামে মালেক ঘরামির বাড়ীতে পৌছলে বিয়ে বাড়ির আনন্দ মুহূর্তেই থমকে যায়! শুরু হয় শোকের মাতম।
নিহত রেশমার স্বামী সুমন মিয়া বলেন, ‘চোখের পলকে যেন ঘটে গেল সবকিছু। আমার সব শেষ হয়ে গেল! ছেলোকে নিয়ে আমি টোলে টাকা দিচ্ছিলাম। ওই সময় পেছন থেকে একটি বাস এসে আমার স্ত্রী ও সন্তানকে চাপা দিয়ে টেনে নিয়ে যায়। আমি চোখের সামনে দেখলেও কিছু করতে পারেনি। আমার পুরো পরিবারকে শেষ করে দিল ঘাতক বাসের চালক! আমি ওদের কঠোর শাস্তি চাই।
উল্লেখ্য, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত হয়। ঘটনার সময় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় টোল দেওয়ার জন্য তাদের মোটরসাইকেলটি যখন দাঁড়িয়ে ছিল সেই সময় পেছন থেকে বেপরোয়া গতিতে আসা একটি যাত্রীবাহী বাস তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় রেশমার ছেলে আব্দুল্লাহ। পরে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে রেশমাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনাগত সন্তানসহ মারা যান রেশমা।
এসটিপি/এমএইচ
প্রধান কার্যলয়ঃ কনফিডেন্স সেন্টার, ভবন-২,
ফ্ল্যাট নং-৭/ই জিপি-খ-৯, প্রগতি স্বরণী, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা-১২১২।
ফোন নম্বরঃ +8809638031309 ই-মেইল:mohammadpurprotidin@gmail.com
@মহম্মদপুর প্রতিদিন