নওগাঃ পাঠকবার্তা ডেস্ক
স্বার্থের কাছে মানবতার পরাজয় ঘটেছে। এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে নওগাঁ। জেলা বদলগাছীতে ৯০ বছরের বৃদ্ধা মাকে মাঠের মধ্যে ফেলে গেলেন মেয়ে। তার খোঁজ রাখেন না ছেলেরোও। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মথুরাপুর ইউপির জগৎনগর গ্রামে।
গ্রামবাসী জানায়, স্বামী মহাতাব গ্রামের এক জন প্রতিষ্ঠিত কৃষক ছিলেন।সুফিয়া বেগমের সংসার জীবন ছিল খুবই সুখের। মহাতাবের জোত সম্পত্তি প্রায় ৪৬ বিঘা। তাদের ঘরে জন্ম নেন তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়ে। বৃদ্ধ বাবাকে কৌশলের বেড়াজালে পেঁচিয়ে ৪৬ বিঘা জমি লিখে নেন ছেলেরা।আট বছর আগে তাদের বাবা মহাতাব মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর সুফিয়া জানতে পারেন, তার স্বামীর জোত সম্পত্তি সব কিছু ৩ ছেলে লিখে নিয়েছেন। এ সময় ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত তিন বিঘা জমি মেয়েদের নামে লিখে দেন সুফিয়া। মেয়েদের জমি লিখে দেওয়ায় ছেলেদের পরিবারে থাকার জায়গা জোটেনি তার।অবশেষে বাড়ির কাছেই বিয়ে দেওয়া আঙ্গুর বেগমের বাড়িতে আশ্রয় নেন সুফিয়া। অন্য মেয়েরা সেখানেই দেখাশোনা করেন।
সুফিয়া বয়সের ভারে আর চলাচল করতে পারেন না। তিনি কথাও বলতে পারেন না, শুধু তাকিয়ে থাকেন। এ অবস্থায় জামাই-মেয়ের সংসারে ভারী হয়ে উঠলেন তিনি।এ নিয়ে জামাই-মেয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সুফিয়াকে মাঠে ফেলে চলে যান আঙ্গুর।
সুফিয়ার জামাই ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘আমার শাশুড়ি আমার কাছেই ছিলেন। কোনো ছেলে তার খোঁজখবর নেন না। অসুস্থ হওয়ার খবর শোনার পরও তার ছেলেরা মাকে দেখতে আসেননি। তাই রাগ করে তার স্ত্রী আঙ্গুর আমার শাশুড়িকে ফাঁকা মাঠে ফেলে আসে।’
বদলগাছী থানার উপপরিদর্শক নিহার চন্দ্র বলেন, ‘ঘটনা জানার পরই ছুটে গিয়েছি সেখানে। সুফিয়া বেগমের বড় ছেলে শিক্ষক মোত্তালেব হোসেন তার ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়েছে। মায়ের ভরণপোষণের দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলে ছেলে-মেয়েদের বিরুদ্ধে ভরণপোষণ আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’