পাঠক বার্তা ডেস্ক:
বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা ‘অনুপ্রবেশের’ অভিযোগ তুলে আবারও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন তৃণমূল সরকারের সমালোচনা করলেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিজেপি নেতা অমিত শাহ।
‘ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ফরেনারস বিল, ২০২৫’ নিয়ে লোকসভায় বৃহস্পতিবার দীর্ঘ সময় আলোচনা হয়। সে সময়, অনুপ্রবেশ ইস্যুতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন অমিত শাহ।
বিজেপি নেতা অমিত শাহের অভিযোগ, অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণা লাগোয়া ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিতে বাধা দিচ্ছে তৃণমূল।
তিনি অভিযোগ করেন, সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিতে বাধা দেওয়ার কারণে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সুযোগ থাকছে।
তিনি বলেন, “ভারত কোনো ধর্মশালা নয়। যারা পর্যটক হিসেবে, শিক্ষার জন্য, স্বাস্থ্য সমস্যা, ব্যবসা এবং বিনিয়োগের জন্য এই দেশে আসবেন, তাদের স্বাগত জানাবে ভারত সরকার।”
“কিন্তু যারা ভারতে অস্থিরতা তৈরি করার ভাবনা নিয়ে আসবেন, তা সে রোহিঙ্গা হোন বা বাংলাদেশি হোন, তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের প্রসঙ্গ টেনে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জীর নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকারের সমালোচনা করেন।
মি. শাহের অভিযোগ, “পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণার সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ হচ্ছে। ৪৫০ কিলোমিটার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ আটকে রয়েছে, কারণ পশ্চিমবঙ্গ সরকার জমি দিচ্ছে না।”
“পশ্চিমবঙ্গ সরকার অনুপ্রবেশকারীদের দয়া দেখাচ্ছে বলেই কাঁটাতারের কাজ আটকে রয়েছে,” যুক্ত করেন তিনি।
তবে এটাই প্রথম নয়। এর আগেও একাধিকবার অনুপ্রবেশ ইস্যুতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে দেখা গিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে।
কখনো তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ভুয়া পরিচয়পত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করার অভিযোগ তুলেছেন, কখনো পশ্চিমবঙ্গের শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ভোটের জন্য জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়ে ‘আপসের’ অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার লোকসভায় অমিত শাহ’র মন্তব্যের বিরোধিতা করেছে তৃণমূল। বিজেপির এই অভিযোগের অবশ্য পাল্টা জবাবও দিয়েছে তারা।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে ডেরেক ওব্রায়ান সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “অনুপ্রবেশ রুখতে বিএসএফ ব্যর্থ। অথচ আঙুল তোলা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের দিকে। আসলে কেন্দ্র এখন নিজেদের ভুল শোধরানোর বদলে অন্যের ওপর দায় চাপাতে ব্যস্ত।”
প্রসঙ্গত, অনুপ্রবেশ নিয়ে লোকসভায় বিরোধীদের তীব্র আপত্তির মাঝেই কণ্ঠভোটে পাস হয়েছে ‘ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ফরেনারস বিল, ২০২৫।’ এরপর তা পরবর্তী আলোচনার জন্য রাজ্যসভায় যাবে।
অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে রাজনৈতিক অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ অব্যাহত রয়েছে। এর নেপথ্যে দুই দলেরই রাজনৈতিক অংক রয়েছে যা ভোটব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কিত।